তুই চলে গেছিস- সে যাওয়া কোনও ঝড়ের মতন বিশৃঙ্খল ছিল না,
বরং ছিল এক নীরব ধ্বস,
যার শব্দ বাইরে নয়- ভিতরে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল একটা গোটা শহর।
আমি চেষ্টা করেছি মানিয়ে নিতে।
তোর না-থাকাকে মেনে নিতে চেয়েছি সময়ের মত স্বাভাবিক করে।
বুঝেছি, কেউ চিরকাল থাকে না-
থেকে যায় শুধু স্মৃতি, কিছু অভ্যাস আর কিছু অজানা প্রতিক্রিয়া,
যার ব্যাখ্যা আমি পারি না নিজেকেও দিতে।
আজকাল এক অদ্ভুত রোগ ধরেছে আমায়-
যার নেই কোনো ক্লিনিক্যাল সংজ্ঞা, নেই ঔষধি প্রতিকার।
অচেনা কোনো মেয়ের পাশ দিয়ে যাওয়া অথবা কোনো পুরনো বই খোলার মুহূর্তে,
বুকের মাঝখানে দাঁড়িয়ে পড়ে এক নীরব সময়।
বাতাস ভারী হয়ে ওঠে,
অক্সিজেন যেন চেনে না আমায়-
মনে হয়…
তুই ঠিক এখানেই, হাত বাড়ালেই ছুঁয়ে ফেলা যাবে তোকে।
ভয়ে চোখ বুজে ফেলি সে সময়ে-
যদি দেখি বিভ্রম।
শব্দ নেই, মুখ নেই, কণ্ঠ নেই-
তবু একটা চেনা সত্তা ঢুকে পড়ে ভিতরে, যা মনে করিয়ে দেয়,
কেমন নিখুঁতভাবে চিনতাম তোকে- কত সহজে খুঁজে নিতাম হাজার জনের ভিড়েও,
শুধু একটুখানি ইশারায়।
তোর সেই চেনা ইশারা এখন অদৃশ্য, তবু কোথাও ছড়িয়ে আছে,
কোনও হাওয়ার দোলায়, কোনও ছায়ার রেখায়,
অথবা কোনো অতীত দুপুরের নিঃশ্বাসে।
আর আমি-
প্রতিবার সেই চেনা অচেনাকে খুঁজে ফিরি নিজের ভিতরের সীমা-পরিসীমা ছাড়িয়ে সমগ্র পৃথিবীর গন্ধে,
নীরবতায় আর হারিয়ে যাওয়া এক ছোঁয়ার অপেক্ষায়।
তন্ময় সিংহ রায়