ধর্মের আগুনে মানবতার ছাই!

শুনেছি নাকি মানুষ জন্মায় মাটি থেকে,
কিন্তু কেউ কেউ নাকি সোনা আর রূপোর খনিতে ফোটে।
তাই বুঝি কেউ কারও হাত ধরতে গেলেই আগে দেখা হয় তাঁর শিকড়ের রং।

একসাথে হাঁটার সাহস করেছিলাম।
ওরা এসে বলল, হাঁটবে তো হাঁটো,
কিন্তু আলাদা রাস্তা ধরে।
এক রাস্তার নাম ‘উত্তম পথ,’
আরেকটার নাম ‘ভ্রান্তি ও লজ্জা সরণি।’

আমাদের স্বপ্নটাকে ওরা মাপলো দাঁড়িপাল্লায়,
দেখল ওজনে কম পড়েছে।
কারণ নিয়ম অনুযায়ী স্বপ্নে আগে সিলমোহর লাগাতে হয়।

বলো তো, অনুভূতির কি আলাদা দপ্তর আছে?
যেখানে ফর্ম ফিলআপ করে অনুমতি নিতে হয়?
‘কার সঙ্গে হাসা যাবে, কার কাঁধে ভর দেওয়া নিষেধ’-
এসব ধারা কোন আইনে লেখা?

ওরা খুব যত্ন নিয়ে ভেঙে দিল আমাদের ঘরের নকশা,
কারণ নাকি ব্যবহৃত ইট ঠিক মানসম্মত নয়।
ইটগুলোতে ছিল শুধু হৃদয়ের দাগ,
ওরা চাইলো তাতে পুরনো বিধির ছাপ।

( বুকের ঠিক মাঝ বরাবর টেনে গেলি একটা রক্তাক্ত বিষুবরেখা!

আমার হৃদপিণ্ডটা অন্তত ফিরিয়ে দিয়ে যা,
ওটা যে তোর কাছেই।
পড়ুন প্রেমিকের সেই আকুতিঃ আসবি ফিরে? )

আজ সে আছে অন্য আঙিনায়,
ওরা খুশি।
কারণ নিয়ম রক্ষা হয়েছে, মানসম্মান অক্ষুন্ন।
শুধু আমার বুকের ভিতরের আদালতে,
নিত্যই সাজা পড়ে ওদের।

মজার ব্যাপার জানো?
এখানে চোখের জলও শ্রেণিবিভাগ পায়।
কারও জল ‘পবিত্র,’ কারওটা আবার ‘অপবিত্র দায়িত্বজল।’
কাঁদতে গেলেও আগে লেভেল লাগাতে হয়।

আমি এখন হাসিমুখে আগুন গিলে নিই।
কারণ ওরা শিখিয়েছে,
দুঃখ প্রকাশ করা নাকি বিদ্রোহ।
আর বিদ্রোহীদের কবরও আলাদা হয়।

তাই আজ আর কিছু চাই না।
শুধু চাই, একদিন যদি আকাশ ভেঙে পড়ে তবে,
এর ভাঙা টুকরোগুলো পড়ুক ওদের বুকের ওপর।
যাতে বুঝতে পারে, আকাশেরও কোনো ধর্ম নেই।

তন্ময় সিংহ রায়

Join Our Newsletter

We don’t spam! Read our privacy policy for more info.

About Articles Bangla

Check Also

একটা দ্বৈত ফ্যান্টাসি দৃশ্য। মাঝের গেটওয়ের দু'পাশে আলো ঝলমলে স্বর্গীয় পথ ও লাভা প্রবাহিত অন্ধকার নরক পথ। একজন সাধু মাঝের পথে হাঁটছেন, উপরে দুই বিশাল তলোয়ারধারী মূর্তি।

মনের গোলকধাঁধাঁ!

মন এক অনন্ত ভ্রমনপথ, যেখানে প্রতিটা চিন্তা জন্মায় আলোয়, আর মরে অন্ধকারে। কখনও সে শিশুর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *