মনের জরায়ুতে জন্ম নেয় যে হিংসে,
তা হাত-পা ছোড়ে না,
নিঃশব্দে জন্ম নেয়,
কিন্তু বিস্ফোরণ বোঝা যায়,
যেন অদৃশ্য আগ্নেয়গিরি।
অন্তর্লোকের গভীরে,
একটা একটা করে মেঘ জমে,
এর পরই বজ্রপাত।
যার জন্মায়,
সে হয়তো নিজেও জানে,
একটু একটু করে পোড়ায় নিজেকেই,
তবুও জন্মায়,
যেন জন্মাতে হয়।
আবার হয়তো জানেও না,
এই আগুন তাকে পুড়িয়েও বাঁচায়।
কারণ মানুষ বাঁচতে চায় তুলনায়,
সমতায় নয়।
পরিবার, প্রতিবেশীর হাসি যায়,
যাক।
ভাতের টেবিলে কথার তীব্রতা,
নিঃশব্দ যন্ত্রণার ছোঁয়া ঘরে-বাইরের বাতাসে।
তবুও চোখের কোণে সন্দেহ, রাগ,
অনুচ্চারিত অস্থিরতা।
যেন তিল হয়ে বসেই থাকে,
উঠতে চায় না।
( একদিন পৃথিবী চুপ করে যাবে,
যেমন হঠাৎ থেমে যায় ঘড়ির কাঁটা।
মানুষ, যে একসময় আকাশ মেপেছিল চোখে,
সে একদিন তাকাবে নিজেরই ধ্বংসের দিকে।
পড়ুন– Click: শেষ প্রজাতির প্রতিচ্ছবি! )
বন্ধুত্বের হাত ছিঁড়ে যায়,
রাস্তায় মানুষ দূরে সরে যায়।
সম্পর্কের মাটিতে শুরু হয় অদৃশ্য কম্পন।
চেনা হয় অচেনা,
তবুও জন্মায়।
কারণ হিংসে মানুষের অন্তর্গত ছায়া।
কত যুদ্ধ, মৃত্যু, ধ্বংস,
প্রতিটা ক্ষত একেকটা স্থায়ী দাগ,
যা মাটির রক্তে মিশে রয়ে যায়।
সময় শুকিয়ে দেয় সে রক্ত,
কিন্তু মনের দাগ আর ওঠে না।
থেমে যায় শিল্প, শিক্ষা, সংস্কৃতি।
থেমে যায় বিবেক, যুক্তি, জ্ঞান।
তবুও জন্মায়,
যেন এ এক জন্মগত অধিকার।
হিংসের আগুনে প্রকৃতি দগ্ধ হয়।
নদীর জল লাল,
বন থেমে যায় নিঃশ্বাসে।
সে আগুন পোড়ায় সমাজ, দেশ, পৃথিবীকে।
তবুও জন্মায়,
যেন জন্মানো উচিৎ।
সে আগুনে পোড়ে বিবেক,
চিন্তা হয় পথভ্রষ্ট,
পোড়ে নিজেও,
কিন্তু বোঝার চোখ ফোটে না।
ধৈর্য্য ডানা মেলে উড়ে যায়,
মন জুড়ে শুধু ধোঁয়া।
তবুও জন্মায়,
অদৃশ্য, অনিবার্য, বাধ্যতামূলক।
কে বলবে এটা ঠিক, এটা ভুল?
যে বলবে,
সেও তো করে।
তবুও জন্মায় যুগে যুগে,
জন্মাবে,
যতদিন না মানুষ নিজের আয়না পড়তে শেখে,
তা বুঝতে শেখে।
এটাই মানুষের স্বভাব,
গাছের নয়।
কারণ গাছ নির্বোধ নয়, তাই শান্ত।
আর মানুষ সর্বশ্রেষ্ঠ, বুদ্ধিমান,
তাই বুদ্ধি চালায় ধ্বংসের দিকে এভাবে,
যেন তাঁদের স্বভাবই নিজের ধ্বংসের প্রতি মুগ্ধতা।