বিজ্ঞানীরা বলেন, পৃথিবী নাকি গরম হয়ে যাচ্ছে।
আমি বলি, পৃথিবী নয়,
দাউ দাউ করে জ্বলছে মানুষের বিবেকটাই।
অন্যের দুঃখের আগুনে আমরা সেঁকে নিই আমাদের নির্লিপ্ততা।
পরিবেশ ক্ষয়ের উপরে বানাই ক্যাপশন– #SaveEarth, #GoGreen,
আর ফেসবুকে ঈশ্বরকে ট্যাগ করে পাঠাই প্রার্থনা,
কিন্তু নিজেদের অভ্যেসটুকু বদলাই না একটুও।

নদী শুকিয়ে যায়, কেউ বলে জলবায়ুর রুষ্টতা।
কেউ বলে সরকারের উদাসীনতা।
কিন্তু আসল কারণ আরও করুণ, নির্মম।
নদীকে মা ভেবে বানিয়েছি রিয়েল এস্টেট,
জলকে জীবন না ভেবে বানিয়েছি পণ্য।
আজ বোতলের ভিতরে বন্দি প্রাণ,
আর বোতলের বাইরের মানুষ ভাবে,
“আমরা স্বাধীন।”
গাছ কাটা মানে নাকি উন্নয়ন।
বস্তুত, আমরা বাস করি এক আজব সভ্যতায়।
যেখানে ছায়াকে হত্যা করে জ্বালানো হয় নকল আলো।
বন পুড়লে আমরা হাহাকার না করে বলি,
“হুম, বেশ গরম পড়েছে এ বছর।”
কারণ দূরের আগুনে কারও ব্যথা হয় না,
যতক্ষণ না তা এসে পড়ে নিজের জানালায়।
হিমবাহ গলছে, সমুদ্র ফুঁসছে,
দ্বীপগুলো মৃতপ্রায় ঘোষিত।
কিন্তু শহরের মানুষ তাচ্ছিল্যে বলে,
“ওরা দূরে থাকে, আমাদের মত সভ্য না।”
কি অদ্ভুত, সারা পৃথিবীকে যখন জল গিলে নেবে,
তখনও আমরা বলবো,
“এটা লোকাল ইস্যু, গ্লোবাল নয়।”
অথবা হয়তো বলবো,
“যার সৃষ্টি আছে, তার ধ্বংসও তো আছে।”

আমরা সকলেই দাঁড়িয়ে আছি জল আর আগুনের মাঝে।
এক হাতে ফোন, অন্য হাতে ভয়,
আর মুখে প্রলয় আসার গল্প,
কিন্তু আচরণে যেন ভাড়া করা এক নিশ্চিন্তি।
আমরা ভাবি, এখনও সময় আছে।
প্রকৃতি বলে, সময় নেই– শুধু পরিণতি আছে।
সেই যে মানুষ নিজেকে ভেবেছে সর্বশ্রেষ্ঠ,
সে ভুল ধারণাই আজও তাঁদের গর্বের কারণ।
প্রকৃতি নীরবে হেসে ফিসফিস করে–
“হ্যাঁ তুমি সবচেয়ে বুদ্ধিমান,
কিন্তু শিখবে সবচেয়ে শেষে,
আর অনুতাপ করবে দেরিতে।
আর আমি লিখে রাখি,
আমরা আগুনের ভিতর দাঁড়িয়ে জল খুঁজছি,
কিন্তু ভুলে গেছি,
এ পৃথিবীতে প্রথম আগুন জ্বালিয়েছিলাম আমরাই।
( সে আগুন পোড়ায় সমাজ, দেশ, পৃথিবীকে।
তবুও জন্মায়, যেন জন্মানো উচিৎ।
পড়ুন– Click: হিংসের গর্ভে মানুষ! )
Articlesবাংলা Bangla Articles, Quotes & Prose-Poetry / বাংলা প্রবন্ধ, উক্তি ও গদ্য-কবিতা।