আজ দেশ জুড়ে কান্নার বন্যা।
শব্দ, সুর আর শ্রদ্ধার ঢেউ আছড়ে ভাঙছে আকাশ-মাটি।
হঠাৎ সব মহীরুহ জেগে উঠেছেন যেন,
নিথর দেহে লেগেছে তাঁদের উষ্ণ নিঃশ্বাস।

কোথায় ছিলেন হে মহানুভব,
যখন জ্বলন্ত সূর্য মেঘে ঢাকা ছিল?
যে দিন সে শিল্পী একা হেঁটেছেন আগুনপথে?
সেদিন সে পথে ছিল শুধুই মানুষ।
তাঁর কণ্ঠস্বর যখন দ্রোহে ফেটে পড়ত,
তখন আপনারা ছিলেন সতর্ক প্রহরী।
আপনাদের সমাজের মঞ্চে তিনি ছিলেন–
‘অবাধ্য’, ‘অবাঞ্ছিত’, এক সরলরেখার বাইরে।
তখন আপনাদের “পঞ্চমুখ” রুদ্ধ,
কণ্ঠনালী জুড়ে যেন নীরবতার হিমালয়।
জীবিত মানুষ তো কেবলই সমস্যা,
এক জীবন্ত অভিযোগ।
আরও যদি হয় প্রতিবাদী, তো চক্ষুশূল।
তাঁকে কোণঠাসা করার হাজার আয়োজন।
আর আজ– প্রশংসায় ষষ্ঠমুখ।
এ যেন মানবতার বিজ্ঞাপন চলছে,
চলছে শ্রদ্ধার নামে কিছু রাজনীতি।
যেন আকাশের চাঁদ আজ প্রথম দেখলেন,
অথচ সে তো রোজই ছিল মাথার উপর।

( এরপর একদিন রাতের রাস্তায় হঠাৎ তাঁর মগজে হেঁচকি ওঠে…
পড়ুন এরপর কি হল– Click: সম্মানীয় ধর্ষকের দর্শনঃ যখন রাজনীতিতে! )
আপনাদের স্তুতিতে আজ যেন তাঁর অপূর্ণতা পূর্ণ হবে।
কিন্তু মরা মানুষ তো সহজ,
কারন সে প্রশ্ন করে না,
করে না কোনও প্রতিবাদ, বিদ্রোহ।
নিথর নক্ষত্রের আর কোনও দাবী থাকে না,
থাকে না কোনও চাওয়া-পাওয়া।
হে মহাকালের সাক্ষী, শোনো–
এ কেমন বিচার!
জীবিতকে কাঁটা, আর মৃতকে ফুলের স্তুপ?
আজ থেমে গেছে তাঁর কন্ঠস্বর, ফুরিয়েছে মানুষটা।
কিন্তু সত্যের প্রতিধ্বনি থামে না কোনও দিন,
বাজে সবার বুকে, শুধু কেউ বলে না।

জীবিততে যে সম্মান পেল না সেই যোদ্ধা-শিল্পী,
নিষ্প্রাণ দেহে এর কি প্রয়োজন?
আজ মনে হয়, এই ফুল, এ সম্মান–
সবই যেন নীরব অনুতাপের মুখোশ।
মনে হয়–
মানবতার বিজ্ঞাপনের সব সুন্দর আয়োজন।
একই থালায় রক্ত খায়।
একজন বলে, “বিশ্বাসে বাঁচো।”
অন্যজন বলে, “আমায় মানো।”
তারপর তারা মিলেমিশে,
মানুষকে ভাগ করে নেয়।
পড়ুন– Click: দুই নেকড়ে! )
Articlesবাংলা Bangla Articles, Quotes & Prose-Poetry / বাংলা প্রবন্ধ, উক্তি ও গদ্য-কবিতা।