নিভে গেল সেই প্রদীপ,
যা শব্দে নয়, কর্মে লিখে গেল মানবতার ইতিহাস।
যা নেভার, তা নেভে পরে।
এটা ঘোর কলির এক বাজে স্বভাব।
নিভে গেল সেই শিখা,
যা শুধু কণ্ঠস্বর নয়,
প্রতিফলিত হয় মানুষের হৃদয়ে।
যেখানে মিথ্যার ভারে চাপা পড়ে থাকে,
সত্যের ক্ষত-বিক্ষত দেহ।
যেখানে রাজনীতিবিদ খোঁজে পদ, ক্ষমতা,
খ্যাতি আর টাকার গন্ধ।
আর অন্ধকার লালন করে অন্তরে।
যেখানে সেলিব্রিটি খোঁজে,
দর্শকের চোখে নিজের প্রতিচ্ছবি।
স্বার্থের ছায়ায় জন্ম নেয় প্রতিটা পদক্ষেপ।
সেখানে তিনি দাঁড়িয়েছেন একলা, অদম্য।
সত্যি বলার জন্যে, নির্ভিক,
যে সত্যে লুকিয়ে আছে মানবতার বীজ।
আমরা দেখেছি কেমন নীচ হয়ে যায় মনুষ্যত্ব,
কিভাবে স্বার্থের আগুনে জ্বলে যায় নৈতিকতা।
কিন্তু তিনি দেখিয়েছেন–
মানবতার আগুনে কিভাবে পোড়ানো যায় অমানবতা।
কিভাবে বাস করা যায় লক্ষ মানুষের হৃদয়ে।
( কেন এমন করে সে দ্বন্দ্ব রচনা করে?
হয়তো সে জানতে চায়, আমি আসলে কে?
সদয় মানুষ, না লোভী প্রাণী?
ভালোবাসার নদী, না হিংসার আগ্নেয়গিরি?
পড়ুনঃ Click– মনের গোলকধাঁধাঁ! )
তিনি দেখিয়েছেন–
সেলিব্রিটির ভিতরেও,
কিভাবে দাঁড়িয়ে থাকে একজন মানুষ ।
যেখানে সবাই দাঁড়ায় স্বার্থের ছায়ায়,
তিনি দাঁড়িয়েছেন আলোর পথে।
যেখানে অন্যরা নীরব,
তিনি বলেছিলেন– “মানুষের মর্যাদা আগে।”
লাল শাক থেকে মনুষ্যত্ব,
যেখানে আজ সবই বিক্রয়যোগ্য।
শুধু মূল্যটা হওয়া চাই ঠিকঠাক।
সেখানে তিনি জানিয়ে গেলেন–
প্রবল ঝড়েও মেরুদণ্ড কিভাবে সোজা রাখে।
কিভাবে থাকা যায় অবিক্রিত।
তাঁর কন্ঠ আজ থেমে গেছে,
কিন্তু বার্তা মুক্ত।
দেহ তাঁর পৃথিবী ছেড়েছে,
কিন্তু রেখে গেছে উত্তরাধিকারী–
আদর্শ, বিবেক ও মনুষ্যত্ব।
ইতিহাসে এর আগেও এসেছেন এমন মানুষ,
দূত হয়ে, প্রতিনিধি হয়ে– মানবতারই কণ্ঠস্বর হয়ে।
যারা অন্ধকারে আলো জ্বেলে গেছেন।
কিন্তু সমাজ কি শিখেছে কোনোদিন?
হয়েছে কতটুকু পরিবর্তন?
স্বার্থের উঁচু আসনে বসা সব মুখ,
আজও একই।
তাদের দেহ দাঁড়ায় আলোয়,
কিন্তু মন অন্ধকারে।
আর বিবেক ঢাকে করতালির শব্দে।
যেন এই তাদের সে জগতের সংস্কৃতি,
যা চলে আসছে বংশপরম্পরায়।
জানি না এ কোন ঈশ্বরের বিচার?
কর্মফল কি তাঁর এটাই ছিল,
অকাল ও মর্মান্তিক মৃত্যু?
তবে যে বলে, “যেমন কর্ম, তেমন ফল?”